বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস, ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব, ঐতিহাসিক ছয় দফার গুরুত্ব

Spread the love

 

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

২য় দ্বিতীয় সপ্তাহের এসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে

    1. ৬ষ্ঠ শ্রেণির ইংরেজি  , বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় 
    2.  সপ্তম শ্রেণির ইংরেজি  , বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
    3. অষ্টম শ্রেণির  ইংরেজি  , বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
    4. নবম শ্রেণী  ইংরেজি , বিজ্ঞান,বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
    5. দশম শ্রেণি বাংলা, ইংরেজি , বিজ্ঞান,  অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে ।

 

৯ম শ্রেণির অ্যাসাইনমেন্ট  ২য় দ্বিতীয় সপ্তাহের  বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়   (BGS) উত্তর ২য় সপ্তাহ

২০২২ Class 9 BGS  Assignment 2nd week, Answer 2022

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

 

৯ম নবম  শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অ্যাসাইনমেন্ট এসাইনমেন্ট ২০২২ উত্তর ২য় দ্বিতীয় সপ্তাহের  PDF Download

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
শ্রেণি: নবম (৯ম)
বিষয়: বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়
সপ্তাহ : ২য়
সাল : ২০২২

নবম শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এসাইনমেন্ট উত্তর দ্বিতীয় সপ্তাহ
নবম শ্রেণির ২য় সপ্তাহের বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

অ্যাসাইনমেন্ট নম্বর: ১ অধ্যায় (১ ও ২)

অ্যাসাইনমেন্ট (শিরোনামসহ): বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

শিখনফল/ বিষয়বস্তুঃ ১। ভাষা আন্দোলনের পটভূমি ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে পারবে। ২। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের প্রভাব বিশ্লেষণ করতে পারবে। ৩। ঐতিহাসিক ছয় দফার গুরুত্ব বিশ্লেষণ করতে পারবে ৪। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব বিশ্লেষণ করতে পারবে।

অ্যাসাইনমেন্ট প্রণয়নের নির্দেশনা (ধাপ/পরিধি/সংকেত):

বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস বিষয়ক একটি নিবন্ধন রচনা করতে হবে। এ নিবন্ধে উল্লেখ করতে হবে:

১। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পটভূমি ও তাৎপর্য

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

২য় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট

বিষয়ঃ বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়

অ্যাসাইনমেন্টের নম্বরঃ

শিরােনামঃ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস

 

 

১। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পটভূমি ও তাৎপর্য,

১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়। ভাষা, নৃতত্ব, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ভৌগােলিকপরিবেশ, খাদ্যাভ্যাসসহ সকল ক্কেত্রে বিস্তর ব্যবধান খাকা সত্বেও কেবল ধর্মের ভিত্তিতে এক হাজারমাইলের ব্যবধানে অবস্থিত পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান তথা আজকের বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তকরে এই অসম রাষ্ট্র গড়ে তােলা হয়। এই রাষ্ট্রের কর্ণধাররা প্রথমই শােষণ ও বৈষম্যের হাতিয়ার হিসেবেবেছে নেয় বাঙালির প্রাণের ভাষা বাংলাকে। অথচ ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় পাকিস্তানেরভাষাগত জনসংখ্যার একটি পরিসংখ্যান খেকে দেখা যায় যে, মােট জনসংখ্যার ৫৪.৬০% বাংলা,২৮.০৪% পাঞ্জাবি, ৫.৮% সিন্ধি, ৭.১% পশতু, ৭.২% উর্দু এবং বাকি অন্যান্য ভাষাভাষী নাগরিক।

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

এরথেকে দেখা যায় উর্দু ছিল পাকিস্তানি ভাষাভাষির দিক থেকে ৩য় স্থানে। অন্যদিকে তদানীন্তন পূর্ব বঙ্গের জনসংখ্যা ৪.৪০ কোটির মধ্যে ৪.১৩ কোটি ছিল বাংলা ভাষাভাষী। এখানে ৯৮% বাংলা এবং মাত্র ১.১% ছিল উর্দু ভাষী। অথচ বাংলা ভাষাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠী বেশ কিছু পরিকল্পনা নেয়। কিন্তু সংগ্রামের ঐতিহ্যে লালিত বাঙালি জাতিমাতৃভাষার ওপর এ আঘাতের বিরুদ্ধে তাৎস্কণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। পাকিস্তান সৃষ্টির ছমাস পেরুতে না পেরুতে তারা বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য রাজপথে নামে যা ১৯৫২ সালে দ্বিতীয় পর্বের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে সাফল্য লাভ করে।

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

২। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন,

১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচন যুক্তপাকিস্তানের প্রথম নির্বাচন (পূর্ব পাকিস্তানে)। ১৯৫১ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা খাকলেও পাক সরকার নির্বাচন দিতে পড়িমসি করে। তাদের ধারণা ছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের ভয়াবহতা পূর্ব পাকিস্তানের নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। কেন্দ্রীয় মুসলিম লীগ নির্বাচনে পরাজিত হবে। সে জন্যে ক্ষমতাসীন মুসলিম সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানে বিলম্ব করে। তারা চেয়েছিল পূর্ব বাংলায় তাদের তাঁবেদার সরকার গঠিত হবে। তাদের শাসনক্ষমতা অক্কুগ্ন থাকবে। সে প্রচেষ্টার কৌশল হিসেবে ১৯৫২ সালে পূর্ববাংলার প্রাণপ্রিয় মাতৃভাষা বাংলার উপর আক্রমণ চালায়। ১৯৪০ সালের পাকিস্তানে ঐতিহাসিক লাহাের প্রস্তাব গৃহীত হয়। এ প্রস্তাবের ভিত্তিতে পাকিস্তান গঠন করার কথা থাকলেও পরবর্তীকালে মােহাম্মদ আলী জিন্নাহর ‘দ্বিজাতিতম্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান সৃষ্টি হয়। লাহাের প্রস্তাব অনুযায়ী একাধিক রাষ্ট্র গঠিত হলে পূর্ববাংলা প্রথমেই স্বাধীন রাষ্ট্র হতে পারত। কিন্তু দ্বিজাতিতম্ের ভিত্তিতে ধর্মীয় ঐক্যের উপর ভিত্তি করে একটি রাষ্ট্র পাকিস্তান গঠন করা হয়।

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

দেশ বিভক্তির পর থেকে পূর্ববাংলার জনগণ রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক অধিকারসমৃদ্ধ সুখী ও স্বাধীন জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখে আসছিল। কিন্তু পাকিস্তান সৃষ্টির অব্যবহিত পর থেকেই পশ্চিমা শাসকগােষ্ঠী পূর্ববাংলার প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ শুরু করে। তাদের কার্যকলাপে স্পষ্টভাবে বুঝা যায়, পূর্ব পাকিস্তানের স্বার্থরক্ষা করতে তারা সম্পূর্ণ নারাজ। তাই নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা দিতে তারা গড়িমসি করে। কিন্তু পূর্ববাংলার নেতৃবৃন্দের চাপের মুখে মােহাম্মদ আলীর তৎকালীন সরকার ১৯৫৪ সালের মার্চ মাসে নির্বাচনের তারিখ ঘােষণা করে। পরিশেষে ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিপুল বিজয় বাঙালি জাতির জীবনে এক স্মরণীয় অধ্যায়। এ নির্বাচনে জয় লাভ করে এদেশবাসী অধিকার সচেতন হযে উঠে। নির্বাচনের ফলাফল বাঙালিকে রাজনীতি সচেতন ও জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে।

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

৩। ঐতিহাসিক ছয় দফার গুরুত্ব:

পাকিস্তান ঔপনিবেশিক শাসনামলে পূর্ব বাংলায় যত রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রণীত হযেছে ৬ দফা ছিল তাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এ ঘটনার ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সকল আন্দোলন সংগ্রাম পরিচালিত হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান তার ছয়দফা দাবির মধ্যে এমন সব দাবি উত্থাপন করেছেন যা বাঙালিকে একটি আলাদা জাতিসত্তা হিসেবে তুলে ধরেছে। এ কারণে ৬ দফা কর্মসূচিকে বাঙালির বাচার দাবি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করতে সম্ষম হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে ৬ দফার গুরুত্ব ও তাৎপর্য সম্পর্কে নিম্নে আলােচনা করা হলাে-

১. বাঙালির মুক্তিসনদ : পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠির অত্যাচার, নিপীড়ন এবং শােষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে ৬ দফা দাবি ছিল বাঙালির মুক্তির সনদ। কারণ পরবর্তীকালে ৬ দফার উপর ভিত্তি করে বাঙালি জাতি তাদের স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনতে সঙ্কম হয়। ৬ দফাকে কেন্দ্র করে মূলত বাঙালিদের মধ্যে একটিম নবজাগরণের সৃষ্টি যা বাঙালির মুক্তির জন্য একান্ত অপরিহার্য। এ প্রসঙ্গে বাঙালির জাতির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, ৬ দফা বাংলার কৃষক, শ্রমিক, মজুর, মধ্যবিত্ত তথা আপামর মানুষের মুক্তির সনদ এবং বাংলার স্বাধীনতার গ্যারান্টি।

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

২.শােষণ ও বৈষম্যের প্রতিবাদ : ৬ দফা দাবি ছিল পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে পশ্চিমাগােষ্ঠি কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানকে শােষণের বিরুদ্ধে প্রথম বলিষ্ঠ প্রতিবাদ। কারণ এর পূর্বে বাঙালি জাতির কোনাে নেতা এমন সুসংগঠিত দাবি বাঙালির জাতির সামনে উপস্থাপন করতে সক্ষম হন নি। শেখ মুজিবুর রহমান ছয় দফা দাবি উত্থাপন কালে বলেছেন “আমাদের বাঁচার দাবি ৬ দফা কর্মসূচি।’ সত্যিই শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে বাঁচাতে ছয় দফা কর্মসূচি জনসম্মুখে তুলে ধরেন।

৩. বাঙালি জাতীয়তাবাদের সুদৃঢট বহিঃপ্রকাশ :

ছয় দফা আন্দোলনের মাধ্যমেম বাঙালি জাতীয়তাবাদের সুদৃঢ় ঘটেছিল। এ আন্দোলনের সময় সমগ্র বাঙালি জাতি একটি প্লাটফর্মের অধীনে চলে আসে। ৬ দফাদাবি ছিল বাঙালি জনগণের আশা-আকাঙ্ক্কার এক মূর্ত প্রতীক এবং এ কারণেই এর প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন ছিল। ৬ দফা

দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বাঙালি জাতি ১৯৬৯ এ ঝাপিযে পড়েছিল।

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

৪. স্বায়ন্তশাসনের দাবি : ৬ দফা দাবির মাধ্যমে সর্বপ্রথম পূর্ব পাকিস্তানকে একটি পৃথক অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি পেশ করা হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের প্রচারণার ফলে ৬ দফার দাবি অতি শীঘ্র সমগ্র। বাংলার জনগণের প্রাণের দাবি হয়ে ওঠে। স্বায়ত্তশাসনের দাবি আদাযের ঢেউ সমগ্র বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে।

৫.স্বাধিকার আন্দোলন : ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই বাঙালিরা স্বাধিকার আন্দোলন পরিচালনা করে। তবে পাকিস্তান সৃষ্টির প্রথম দিকে এ আন্দোলন তেমন পূর্ণতা পায় নি। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত ৬ দফা দাবি বাঙালি জাতিকে তাদের স্বাধিকার আদায়ের অপরিসীম শক্তি ও সাহস যুগিযেছে। যেসব উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে সামনে রেখে পাকিস্তান সৃষ্টি হযেছিল তার একটিও বাস্তবায়িত না হওয়ায় বাঙালি জাতি ৬ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাধিকার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে।

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

৬. ১৯৭০ এর নির্বাচনে প্রভাব : ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ৬ দফার প্রভাব ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগ ছয় দফা কর্মসূচিকে তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে সন্নিবেশ করে। নির্বাচনী প্রচারাভিযানে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ তথা শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচনে জয়লাভ করলে জনগণকে ৬ দফা বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। ফলেনা আওয়ামী লীগ উক্ত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।

 

৪। ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব:

এ ভাষণের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি বিশ্ব ইতিহাসে নতুন এক শিকরে পৌঁছে যায়। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর উদ্বীপ্ত ঘােষণায় বাঙালি জাতি পেযে যায় স্বাধীনতা ও গেরিলাযুদ্ধের দিক-নির্দেশনা। এর পরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইযের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এ বজ্ নিনাদে আসন্ন মহামুক্তির আনন্দে বাঙালি জাতি উদ্জীবিত হয়ে ওঠে। যুগ যুগ ধরে শােষিত-বক্ষিত বাঙালি ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় কাজ্ক্কিত মুক্তির লক্ষ্যে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে রাজনৈতিক দিক-নির্দেশনার পথ ধরেই ৯ মাসের রক্তস্কয়ী যুদ্ধে লাখাে প্রাণের বিনিময়ে বিশ্বমানচিত্রে আল্মপ্রকাশ করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের গুরুত্ব নিচে তুলে ধরা হলাে :

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

১. গণতন্ত্রের ডাক : বঙ্গবন্ধু তার ১০১৫ তথা ১১০৮ শব্দের ভাষণে গণতন্ন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং দেশের শাসনতন্ত্র তৈরির আকুল আবেদন ও তীব্র আকামখা পেশ করেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের পর বাংলাদেশের মানুষ সম্পূর্ণভাবে আমাকে ও আওয়ামী লীগকে ভােট দেন। আমাদের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বসবে, আমরা সেখানে শাসনতন্ত্র তৈরি করবাে এবং এ দেশকে আমরা গড়ে তুলবােগণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তার এ তাষণের গুরুত্ব অপরিসীম।

২. বৈষম্যের ইতিহাস উপস্থাপন : বঙ্গবন্ধু ভাষণের প্রথম পাকিস্তান আমলের দীর্ঘ তেইশ বদরের বৈষম্যমূলক ইতিহাস তুলে ধরেন। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ বিভক্তির মধ্য দিয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হওয়ার পর থেকে পশ্চিম পাকিস্তান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে শােষণ ও শাসন করতে থাকে, গড়ে ওঠে বৈষম্যের পাহাড়। সামরিক বাহিনীর তিনটি সদর দপ্তরই ছিল পশ্চিম পাকিস্তানে। সেনাবাহিনীতে ১৫ ভাগই ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি, অর্থনৈতি স্কেত্রে এ বৈষম্য ছিল আরও ব্যাপক।

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

৩. নির্যাতনের পর্ণাঙ্গ চিত্র : বঙ্গবন্ধুর ভাষণে বাঙালি জাতির ওপর দীর্ঘ তেইশ বদরে যে নির্মম নির্যাতন চালানাে হযেছে তার চিত্র ফুটে উঠেছে। জাতির জনক তার ভাষণের তৃতীয় লাইলেই বলেন কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম রাজশাহী রংপুরে আমার ভাইযের রক্তে রাজপথ রঙজিত হযেছে- তিনি ভাষণে পাকিস্তানী শাসকগােষ্ঠীর ২৩ বদরের শাসনামলকে বাংলার মানুষের রক্তের ইতিহাস হিসেবে উল্লেখ করেন।

৪. সংগ্রামী চেতনার ডাক : স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকারের দাবিতে বাঙালি জাতি যে সংগ্রামের সূচনা করে আক্মাহতি দেয় বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে তা তুলে ধরেছেন। নানাদিক থেকে বঙ্ষিত, নিপীড়িত, লান্বিত জনগণ তাদের দাবি মেনে নেয়ার জন্য আন্দোলন চালাতে থাকে। মৃত্যুর মুখেও নির্ভযে এগিযে যায় এবং রক্তে রজিত হয় রাজপথ। দেশকে মুক্ত করার জন্য জনগণ নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালালেও পাক সামরিক বাহিনী গুলি চালায় নিরীহ জনগণের ওপর। তবুও সংগ্রামী জনগণ পিছপা হয়নি।

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

৫. বাঙালি জাতীয়তাবাদ : বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে বাঙালি জাতীয়তাবাদের চেতনা ফুটিযে তুলেছেন। তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠায় ছিন্দু, মুসলমান, বাঙালি, অবাঙালি সবার কথাই বলেছেন। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে বাভালি জাতীয়তাবাদ যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, তা আজ পর্যন্ত বিশ্বের কোনাে নেতা করতে পারেনি। তিন সেদিন সমগ্র বাঙালি জাতির মধ্যে একতার জলন্ত শিখার বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন তার সম্মােহনী বক্তব্যের মাধ্যমে, যা পরবর্তীতে স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছিল।

৬. গেরিলা যুদ্ধের নির্দেশনা : তিনি অশ্তে সজ্জত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্রমণকে প্রতিহত করে বিজয় ছিনিয় আনতে যে কৌশল প্রযােগের নির্দেশনার দিয়েছেন তা, খুবই গরুত্ববহ। তিনি বলেন, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তােল, তােমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মােকাবিলা করতে হবে, রাস্তাঘাট যা যা আছে আমি যদি হুকুম দেবার না পারি তােমরা বন্ধ করে দেবে, আমরা ভাতে মারব, আমরা পানিতে মারব।

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

०৭. মুক্তি সংগ্রামের ঘােষণা : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চর ভাষণে এই বলে মুক্তির সংগ্রাম ঘােষণা করেছিলেন যে, ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। তার এই নিষ্কম্প ঘােষণা বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রেরগা দিয়েছিল। জাতির উদ্দেশ্যে এই ছিল তার যুদ্ধপূর্ব শেষ ভাষণ। তাই এতে তিনি যুদ্ধের দিকনির্দেশনা দিয়ে পন্তুতির কথা বলেছিলেন। তখন বাঙালির হাতে কোনাে অস্ত্র ছিল না। তাই যার যা আছে তা নিয়ে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তােলার আহ্বান জানান। তার এই সংগ্রাম ঘােষণায় যে পশ্চিমাদের অত্যাচার বৃদ্ধি পাবে তা তিনি ধারণা করেছিলেন। সেজন্য তৎকালীন হানাদার শাসকদের সঙ্গে সম্পূর্ণ অসহযােগিতা প্রদর্শনের নির্দেশ দেন। তিনি তার অনন্য ভাষণে মুক্তিসংগ্রামের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছিলেন।

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ জনতার সামনে যে তেজোদ্বীস্ত জ্বালাময়ী কাব্যিক ভাষণ দিয়েছিলেন তা বাঙালির মনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। বাঙালিকে স্বাধীনতা লাভের জন্য উন্মত্ত করেছিল বাংলার মানুষ বর্ণ-গােত্র ও ধর্ম
ভুলে গিয়ে দেশের জন্য হাসিমুখে জীবন দিতে শপথ করেছিল। ইউনেস্কো এ ভাষণকে পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ দালিলিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার এর মাধুর্য, শ্রেষ্ঠত্ব ও গরুত্ব এবং বাঙালি জাতির সংগ্রামের ইতিহাস এখন পৃথিবীর নানা প্রান্তে-ছড়িযে বহু-ভাষী মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। এটি এখন শুধু বাংলাদেশের নয় বরং সারা বিশ্বের সম্পদে পরিণত হযেছে। বিশ্ব সংস্থার স্বীকৃতির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী গবেষণা হবে, বিশেষ করে জ্ঞানান্বেষী তরুণ সমাজের মনে এটি স্থান পাবে।

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

 এই ছিল তোমাদের অ্যাসাইনমেন্ট উত্ত

 

তোমার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দাও। তাহলে তারাও খুব সহজে অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে পারবে ।

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

 

৯ম নবম  শ্রেণি

বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় [২য় সপ্তাহ] অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর PDF Download

 

ক্লিক করুন

 

 

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস-2-

ঐতিহাসিক ছয় দফার গুরুত্ব:

৪। ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব:

বাংলাদেশের ও অভ্যুদয়ের ইতিহাস-6

 

তোমার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দাও। তাহলে তারাও খুব সহজে অ্যাসাইনমেন্ট লিখতে পারবে ।

 

 

Join our YouTube channel

class 9 all submit

 

 

 

 

 


Spread the love

Leave a Comment